আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে সারের প্রকারভেদ ও বিভিন্ন জৈব সার সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জৈব সার তৈরি ও তার ব্যবহার সম্পর্কে জানব। জৈব সার ব্যবহারে-
(১) মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। (২) মাটির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক গুণাগুণের উন্নতি হয়। (৩) মাটিস্থ অণুজীবের কার্যাবলি বৃদ্ধি পায়। (৪) মাটির পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। (৫) মাটি থেকে পুষ্টির অপচয় কম হয়। (৬) মাটির উর্বরতা বাড়ে। (৭) মাটির সংযুক্তির উন্নতি হয়। (৮) ফসলের উৎপাদন ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়। (৯) মাটির পরিবেশ উন্নত হয়।
কাজ: শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দলে বিভক্ত করে 'জৈব সার ব্যবহারের উপকারিতা' বিষয়ে শ্রেণিতে লিখতে দিবেন এবং দলগতভাবে তা উপস্থাপন করার ব্যবস্থা করবেন। |
এবার আমরা জৈব সার হিসেবে কম্পোস্ট সার, সবুজ সার ও খৈল তৈরি নিয়ে আলোচনা করব।
কম্পোস্ট তৈরি: গবাদিপশুর মলমূত্র, খাবারের উচ্ছিষ্ট, খড়কুটা, বিভিন্ন প্রকার কৃষিবর্জ্য, আগাছা, কচুরিপানা প্রভৃতি খামার প্রাঙ্গণে স্তরে স্তরে সাজিয়ে অণুজীবের সাহায্যে পচিয়ে যে সার তৈরি করা হয়, তাকে কম্পোস্ট সার বলা হয়। কাজেই অনেকগুলো জিনিস একত্রে পচিয়ে বা কখনো কখনো একটিমাত্র উপাদান দ্বারাও কম্পোস্ট তৈরি করা যায়। দুটি পদ্ধতিতে কম্পোস্ট তৈরি করা যায়। যথা- সস্তূপ পদ্ধতি ও পরিখা পদ্ধতি।
এখানে আমরা পরিখা পদ্ধতিতে কম্পোস্ট সার তৈরি সম্পর্কে জানব।
পরিখা পদ্ধতিতে কম্পোস্ট তৈরি : পরিখা পদ্ধতিতে সারা বছর কম্পোস্ট তৈরি করা যায়। এ পদ্ধতিতে সার তৈরির নিয়মাবলি-
১. (ক) প্রথমে একটি উঁচু স্থান নির্বাচন করতে হবে (খ) নির্বাচিত স্থানে ৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২ মিটার প্রস্থ ও ১.২ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট পরিখা খনন করতে হবে (গ) এভাবে ৬টি পরিখা পাশাপাশি খনন করতে হবে (ঘ) পরিখার উপর চালার ব্যবস্থা করতে হবে (ঙ) পাঁচটি পরিখা আবর্জনা, খড়কুটা, লতাপাতা, গোবর দিয়ে পর্যায়ক্রমে সস্তূপাকারে সাজাতে হবে এবং একটি পরিখা খালি থাকবে (চ) প্রতিটি পরিখার আবর্জনার স্তূপ ভূপৃষ্ঠ হতে ৩০ সেমি উঁচু হবে (ছ) চার সপ্তাহ পর নিকটবর্তী পরিখার কম্পোস্ট খালি পরিখায় স্থানান্তর করতে হবে (জ) এভাবে কম্পোস্টের উপাদানগুলো ওলটপালট করতে হবে। ফলে উপাদানগুলোর পচনক্রিয়াও ত্বরান্বিত হবে।
২. ২-৩ মাসের মধ্যে উপাদানগুলো সম্পূর্ণ পচে কম্পোস্ট তৈরি হবে।
কম্পোস্ট সারের উপকারিতা : কম্পোস্ট সার ব্যবহারে-
(১) মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন শক্তি বৃদ্ধি পায় (২) মাটিতে পুষ্টি উপাদান যুক্ত হয় (৩) মাটিস্থ পুষ্টি উপাদান সংরক্ষিত হয় (৪) মাটির সংযুক্তির উন্নয়ন ঘটে (৫) মাটির পানি ধারণক্ষমতা ও বায়ু চলাচল বাড়ে (৬) মাটিস্থ অণুজীবগুলো ক্রিয়াশীল হয়।
Read more